সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
২০১৫ সাল। ফেইসবুকের কল্যাণে, দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা ভারতেশ্বরী হোমসের এসএসসি ১৯৯৪ ব্যাচের বন্ধুরা একত্রিত হতে শুরু করে। বহুবছর পর একেকদিন একেকজন বন্ধুকে পেয়ে, মেসেঞ্জার গ্রুপে সেই দিনগুলোতে নিয়মিত ঝড় তুলে আড্ডা চলছিল। এমনই একটা দিনে বন্ধু অপর্ণা সাহা অপু আরেক বন্ধুর অর্থনৈতিক সঙ্কট ও দুর্দশার কথা গ্রুপে উত্থাপন করেন। কিছুদিন আলোচনা শেষে সঙ্কটাপন্ন বন্ধুটির জন্য অর্থ সংগ্রহ শুরু হয়।
এই বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধানের উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালের ১৫ মে নাহিমা সুলতানা রেখার ঝিগাতলা, ঢাকা অবস্থিত বাসায় ৯ জন বন্ধু প্রথমবারের মতো একত্রিত হয়, সেই দিন আরও ৫ জন বন্ধু অনলাইনে আলোচনায় অংশ নেয়। বিস্তারিত পর্যালোচনার পর প্রস্তাবিত হয়, সংগৃহীত অহবিল/ফান্ড একদফায় সঙ্কটাপন্ন বন্ধুটির একাউন্টে ট্রান্সফার করার পরিবর্তে একটা সাধারণ তহবিল (কমন ফান্ড) গঠন করা হবে যাতে করে অন্য কেউ সঙ্কটে পড়লে তাকেও সহযোগিতা করা সম্ভব হয়। ফলে এই তহবিলটিকে কিভাবে আরও সমৃদ্ধ করা যায় এবং সবসময় চালু রাখা যায় এই নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে, ব্যস্ততা, দায়বদ্ধতা ও ধারাবাহিকতা রক্ষা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে এই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় সব বন্ধু সেদিন সহমতে পৌছতে পারেন নাই।
কয়েক দফায় বিশদ আলোচনা শেষে ২৪ জুলাই, রুমানা জামানের বাসায় বন্ধুদের ৩য় সভায় উক্ত সঙ্কটাপন্ন বন্ধুর উপস্থিতিতে বিষয়টির মীমাংসা হয় এবং সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে একটি সাধারণ তহবিল থেকে প্রতিমাসে (যতদিন বন্ধুর সঙ্কট মোচন না হয়) তাঁর একাউন্টে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অঙ্ক পাঠিয়ে দেয়া হবে এবং এর বাইরেও কিছু আগ্রহী বন্ধুদের আর্থিক সহায়তার পুরো অংশ তাঁকে একদফায় পাঠিয়ে দিবেন।
এই সাধারণ তহবিল গঠনের মধ্য দিয়ে একটি সাংগঠনিক প্রয়োজনীয়তা ও চিন্তা দানা বাঁধতে শুরু করে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৫ম সভায়, ১৮ জন সদস্যকে নিয়ে সারিয়া নাফিয়াকে সভাপতি এবং নাহিমা সুলতানাকে সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি অস্থায়ী কার্যকরী কমিটি গঠন করে একটি সাংগঠনিক রূপ দেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে, নিয়মিত একেক বন্ধুর বাসায় সভা করে নতুন বন্ধুদের একত্রিত করা ও উদবুদ্ধ করার কাজ চলে। বিভিন্ন বিনোদনমূলক আয়োজনের মাধ্যমেও সাংগঠনিক চিন্তা ও পরিকল্পনা ধীরে ধীরে বিকশিত হয় এবং কিছু কার্যক্রম চলতে থাকে। এর মধ্যে তহবিল গঠন ও শিক্ষাভাতা প্রদান উল্লেখযোগ্য।
২০১৮ সালে ডলি আক্তার হেনার নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত বাগান বাড়িতে “আয় মন রঙ ছড়াই” শীর্ষক একটি বনভোজনে মোট ২৬ জন বন্ধু একত্রিত হয়, এবং এই সময় সাংগঠনিকভাবে কিছু দক্ষ, আগ্রহী ও সম্ভাবনাময় বন্ধু সংগঠনে যোগ দেন। আগস্ট ১৫, ২০১৯, ২২ তম মিটিং এ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী পরিষদ গঠিত হয়। প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভাকে উপলক্ষ করে বেইলী রোডে ১৫তম সভা হয়, ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর ১ম বার্ষিক সাধারণ সভা ঘোষিত হয়। এই সময় সাংগঠনিক কাজের জরুরী নথিপত্র, বার্ষিক প্রতিবেদন ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করার কাজ শুরু হয়। সংগঠনের রেজিস্ট্রেশনের ভাবনা শুরু হয়। ২৩তম সভায় সংগঠন এর কয়েকটি প্রস্তাবিত নামের (আস্থা, একতা, ধুবতারা, বেস্ট, নোবেল, 4AB, মামাজ, আবেস, এসো) মধ্যে থেকে, নাসরিন আক্তার ডলি প্রস্তাবিত “এসো” (ESO – Education and Solidarity Organization”) চূড়ান্ত করা হয়।
ভিশন- “সার্বজনীন শিক্ষা ও সুবিধাবঞ্চিতদের ক্ষমতায়ন” মিশন “বন্ধু মহল ও পরিচিতদের উদবুদ্ধ করে সুবিধবঞ্চিতদের জন্য একটি সুদৃঢ় টেকশই শিক্ষাভাতা তহবিল গঠন ও ব্যবস্থাপনা এবং আশ্রয়স্থল তৈরী ও কর্মসংস্থান করা” সংগঠনটি কার্যক্রম শুরু করে। সংগঠনটির কার্যক্রম বিবেচনা করে ১৫ মে, ২০১৫ সালকে সংগঠন এর প্রতিষ্ঠা কাল নির্ধারণ করা হয়। ২০২০ সালে সমাজকল্যান অধিদপ্তরের অধীনে সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন কাজ শুরু হয়। ২০২০, ২০২১ সালে করোনা কালিন স্থবিরতার জন্য, রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। ২০২২ সালের ৪ জুলাই রেজিস্ট্রেশনের সনদপত্র পাওয়া যায়। রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার. ঢ. ০৯৯৪৪।